আজ আপনার জানবেন, অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধনের কিভাবে আবেদন করবেন। জন্ম নিবন্ধনের জন্য কি কি কাগজপত্র লাগবে, জন্ম নিবন্ধন ফরম পূরণ করার নিয়ম ও জন্ম নিবন্ধনের আবেদন ফি কত। এইসব করে যাবতীয় তথ্য জানার জন্য আমাদের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
আপনারা যারা নিজের এবং আপনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করতে চান তাদের জন্য এই পোস্টটি পড়ুন। জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন ফরম কিভাবে পূরণ করবেন (Jonmo Nibondhon Abedon Online Application Form) এবং আবেদন ফরম পূরণ করার জন্য প্রয়োজনীয় কি কি কাগজপত্র লাগবে জানতে পারবেন।
নিম্নোক্ত আলোচনায় আমরা সম্পূর্ণ রুপে আপনাকে নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদনের জন্য সকল তথ্য প্রদান করুন।
Contents
নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন
বাংলাদেশ সরকারের আইন অনুযায়ী, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ অনুসারে শিশু জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করা বাধ্যতামূলক।
যদি বিভিন্ন কারণে ৪৫ দিনের মধ্যে আপনি জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে ভুলে যান তাহলে অবশ্যই দ্রুত সময়ে তা করে নেবে। এছাড়াও আপনি পাঁচ বছর পর্যন্ত জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে পারবেন।
যদি পাঁচ বছরের বেশি সময় অতিক্রম হয়ে যায় তাহলে আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন প্রকার তথ্য ও ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে এবং আপনাকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে তাই অতি দ্রুত সম্ভব আপনার জন্ম নিবন্ধন শক্তি সম্পন্ন করার জন্য আমরা পরামর্শ দিচ্ছি।
নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে কি কি লাগে
নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে হলে যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে তা নিম্নে আলোচনা করা হল।
শিশুর বয়স ০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে হলে, যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন
- ইপিআই কার্ড ( যাকে টিকা কার্ড বলে)
- পিতা ও মাতার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন করতে হবে ( যদি না থাকে তাহলে কিন্তু পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করুন)
- পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি (যদি থাকে)
- আবেদনকারী পিতা-মাতা/ অভিভাবকের মোবাইল নম্বর
- বাসার হোল্ডিং নম্বর এবং হাল সনের হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ
শিশুর বয়স ৪৬ থেকে ৫ বছর হলে, যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন
- ইপিআই কার্ড ( যাকে টিকা কার্ড বলে) / স্বাস্থ্য কর্মীর প্রত্যায়নপত্র (স্বাক্ষর ও সীলসহ)
- পিতা ও মাতার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন করতে হবে ( যদি না থাকে তাহলে কিন্তু পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করুন)
- পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি (যদি থাকে)
- জ্যোতিষশাস্ত্র হয় যে বিদ্যালয় লেখাপড়া করছে সে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়নপত্র (স্বাক্ষর ও সীলসহ)
- বাসার হোল্ডিং নম্বর এবং হাল সনের হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ
- অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধনের ফরম জমা দেয়ার সময় ১ কপি রঙ্গিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- আবেদনকারী পিতা-মাতা/ অভিভাবকের মোবাইল নম্বর
৫ বছরের বেশি শিশু বা ব্যক্তির জন্য, যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন
- বয়স প্রমাণের জন্য চিকিৎসক কর্তৃক প্রত্যয়ন পত্র (বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল কর্তৃক স্বীকৃত এমবিবিএস বা তদূর্ধ্ব ডিগ্রিধারী কর্তিক সনদপত্র)
- বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পরিচালিত, প্রথমিক শিক্ষা সমাপনী, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট বা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট
- পিতা ও মাতার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন করতে হবে ( যদি না থাকে তাহলে কিন্তু পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করুন)
- পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি (যদি থাকে)
- অথবা, জন্মস্থান বা স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণের জন্য পিতা / মাতা/ পিতামহ / পিতামহীর দ্বারা স্বনামে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে যেমন বিদ্যুৎ বিলের কপি
নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফরম পূরণ করার নিয়ম
জন্ম নিবন্ধনের জন্য অনলাইন আবেদনের জন্য প্রথমে আপনাকে সরকার কর্তৃক পরিচালিত অফিশিয়াল ওয়েবসাইট https://bdris.gov.bd/br/application এই লিঙ্কে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য স্থায়ী ঠিকানা বর্তমান ঠিকানা সম্পূর্ণ চলচ্চিত্র ফিলাপ করে আপনার পরবর্তী অপশনে যেতে হবে । জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে আবেদনের জন্য যেসকল আপনাকে পূরণ করতে । যাবতীয় তথ্য সম্পূর্ণরূপে ব্যাখ্যা করব।
প্রথম ধাপ : নিবন্ধনাধীর ব্যক্তির পরিচিতি ও জন্মস্থানের ঠিকানা
জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে আবেদনের জন্য প্রথমে আপনাকে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে। অফিশিয়াল ওয়েবসাইট https://bdris.gov.bd/br/application.
আপনি যে ঠিকানা জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করেছেন সেটি কমিটি সম্পূর্ণরূপে ফিলাপ করুন।
প্রথম অংশে আপনাকে যে যে তথ্য ফিলাপ করতে হবে সেগুলি হল ।আপনার নাম বাংলা এবং ইংরেজিতে, লিঙ্গ, স্থায়ী ঠিকানা বর্তমান ঠিকানা, গ্রাম ডাকঘর পোস্ট অফিস ইত্যাদি সম্পূর্ণ ডকুমেন্ট বাংলা ইংরেজিতে লিখতে হবে। অবশ্যই আবেদনপত্রটি সাবমিট করার পূর্বে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে দেখা উচিত যাতে কোনো তথ্য ভুল না হয়।
দ্বিতীয় ধাপ : পিতা ও মাতার তথ্য
দ্বিতীয় যাবে অবশ্যই পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি দিতে হবে। অনলাইন বা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও এবং জাতীয় পরিচয় পত্র দাখিল করতে হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো যে যদি ২০০০ সালের পূর্বে তার জন্ম তারিখ হয়ে থাকে, তাহলে পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি লাগবেনা ।শুধু জন্ম নিবন্ধন এর নাম্বারটা থাকলেই হবে।
তৃতীয় ধাপ: স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা
এখানে অবশ্যই আবেদনকারীর স্থায়ী ঠিকানা এবং অস্থায়ী ঠিকানা দুটি সম্পূর্ণ ত্রুটিপূর্ণ ঠিকানা প্রদান করতে হবে। আপনি যদি দেখতে পান তাহলে ছবির আলোকে আপনি সম্পূর্ণ তথ্য দেখে দেখে নিজে নিজে করুন।
চতুর্থ ধাপ : আবেদনকারীর তথ্য
এবং সে আবেদনকারীর সকল তথ্য দিতে হবে, শিশুর আবেদনের জন্য তার পিতামাতার আজাদী এবং নানান নিজেকে অভিভাবক হিসেবে আবেদন করতে হবে।
তাছাড়া নিজেই নিজের জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করতে পারেন সেক্ষেত্রে নিজেই নিজের সম্পূর্ণ তথ্য দিতে পারেন।
উপরের যাবতীয় তথ্য থাকলে পরবর্তী অপসন এ ক্লিক করুন
পঞ্চম ধাপ : নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন পত্র প্রিন্ট
আপনি যদি সফল ভাবে জন্ম নিবন্ধন সকল তথ্য দিতে সমর্থ হয়ে থাকেন তাহলে তাৎক্ষণিক আপনি কি অনলাইন কপি ডাউনলোড করে রাখতে পারেন, যা সম্পূর্ণ পরবর্তী কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।
অনলাইন কঁপি ডাউনলোড এবং ক্লিন করার জন্য অবশ্যই আপনাকে জন্মনিবন্ধনের অ্যাপ্লিকেশন নম্বর এবং আপনাকে তার জন্মতারিখ লিখতে হবে এবং পরবর্তীতে আপনি পিডিএফ ডাউনলোড করে রাখতে পারেন।
জন্ম নিবন্ধন আবেদন সংক্রান্ত প্রশ্ন ও উত্তর
একজন ব্যক্তি কি একাধিকবার জন্ম নিবন্ধন করতে পারবে?
একই ব্যক্তি একাধিকবার জন্ম নিবন্ধন করতে পারবে না। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ অনুযায়ী এখানে একাধিক জন্ম নিবন্ধন আবেদন করা দন্ডনীয় অপরাধ। অনলাইনে চেক করার সময় যদি একাধিক জন্ম নিবন্ধন তথ্য পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই মুছে ফেলা প্রয়োজন।